Friday, May 28, 2010

জীবিতের প্রার্থনা - মূল: বেন অকরি - রূপান্তর: আলীম আজিজ

সূর্যাস্তের মুখে মুখে শহরে ঢুকলাম আমরা। বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। কী দেখব যেন জানাই ছিল, সর্বত্র ধ্বংসাবশেষের চিহ্ন; বিরান, হাহাকার প্রান্তর যেন একেকটা বধ্যভূমি, চারপাশে শুধু মৃতেরা।
বন্দুকধারীরা সর্বত্র। যেন নরক ভেঙে পড়েছে এখানে। খুদে গডফাদাররা কেড়ে নিয়েছে সব, আমাদের জন্য আসা খাবারের কোনোটাই আমাদের হাতে পৌঁছাতে পারেনি। বিমান থেকে ছুড়ে ফেলা খাদ্য, রিলিফের খাবার সব নিজেরা ভাগ করে নিয়েছে, বিলিয়ে দিয়েছে নিজেদের আত্মীয়স্বজন ও গোত্রের লোকজনের মাঝে।
আমরা মরে গেলেও কারও যায়-আসে না। আমার জন্য খাবার এখন আর কোনো ঘটনা নয়। উপোস দিয়ে দিব্যি তিন হপ্তা কাটিয়ে দিয়েছি। এখন আমি বেঁচে আছি শুধু বাতাস খেয়ে, আর নিরন্তর শুধু খুঁজছি।
প্রতিদিন, আমি কৃশ থেকে আরও কৃশকায় হচ্ছি আর আমার চারপাশে নানান বেভুল জিনিসপত্র দেখছি—সব শব, না খেয়ে মরা সব মৃত মানুষেরা ভিড় করে আসছে। সবারই খুশি মুখ, অনেক খুশি তারা এখন, আমাদের চেয়ে অনেক সুখী; চারদিকে শুধু ওরাই, যেদিকে তাকাচ্ছি ওদের আনন্দে উদ্ভাসিত মুখ-চোখ, যেন কিছুই ঘটেনি, অথবা মনে হচ্ছে যেন ওরা আমাদের চেয়েও জীবিত।


যত বেশি ক্ষুর্ধাত হচ্ছি, তত যেন ওরা ঝাঁপিয়ে আসছে—আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু, যার আমার আগেই মৃত্যু হয়েছে, তার মুখ—ভনভনে মাছি এসে ঢেকে ফেলেছে মুখটাকে। তার পরও ও যেন জীবন্ত, যেন আলো-বাতাস খেয়ে বেঁচে আছে এখনও। চোখে-মুখে রাজ্যের করুণা আর সমবেদনা নিয়ে দেখছে আমাদের—আমরা যারা এখনো বেঁচে আছি।
এই ব্যাপারটা, ওই টিভি ক্যামেরা আর যৎসামান্য খাবার নিয়ে আসা সাদারা কোনোদিনই বুঝতে পারবে না। ওরা আশা করে, এসেই আমাদের কান্না ভেজা মুখ দেখবে। পরিবর্তে দেখে আমরা শুধু বিশাল চোখে শূন্যদৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে আছি, কেউ হাত পেতে ভিক্ষা চাইছি না, মুখচোখ অদ্ভুত শান্ত, স্তব্ধ। এভাবে মরতে আমরা ভয় পাচ্ছি না এটা ভেবে উল্টো ওরা যেন ভেতরে ভেতরে শঙ্কিত হয়ে পড়ে।
কিন্তু তিন হপ্তার নিদারুণ ক্ষুধার জ্বালায় চেতনায় অনেক কিছুই দাগ কাটে না, কোনো কিছুই আর নজরে পড়ে না, মৃত্যুর শেষ সীমায় পৌঁছে গেছি, আত্মারা তাই আর এই শাস্তি বইতে চাইছে না, প্রাণপণে নিষ্কৃতি চাইছে, কিন্তু পারছে না নাছোড় শরীরটার কারণে।

এ শহরে আসলে আমাদের আসা উচিত ছিল অনেক ভোরে। সব মরেছে এ শহরের। গরু-ঘোড়াগুলোও মরছে। আমার মনে হচ্ছে বাতাসও দূষিত হয়ে গেছে, মৃত্যুর গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এটা পুরো সত্যি, নয়। উৎকট তাপে পচা চর্বি আর নর্দমার গন্ধও আছে। রসিকতার মতো হালকা ফুলের গন্ধও যেন আছে বাতাসে।
একমাত্র মৃত মানুষেরই যেন মৃত্যু হয়নি। তারাই যেন প্রবলভাবে বেঁচে আছে সর্বত্র। সমবেত স্বরে সোনালি সংগীত গাইছে, বিজয়ানন্দ চতুর্দিকে, ওরা ওদের নিত্যদিনের জীবন যাপন করে যাচ্ছে যথারীতি। আর যাদের মৃত্যু হয়নি, তারা হলো ওই সৈনিকেরা। যারা নিরন্তর, অক্লান্তভাবে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কত শত মরছে এতে ওদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ওদের যত চিন্তা এই নির্মম জটিল যুদ্ধের অঙ্ক ঠিকমতো কষে যাওয়া, যাতে সব যুদ্ধের সেরা যুদ্ধ—একসময়কার এই সভ্য, সুন্দর ভূমি, যা এখন পরিণত এক বিশাল, অসম্ভব গোরস্তানে—, যেকোনো মূল্যে এর সফল নেতৃত্ব যেন ওদের হস্তগত হয়।
আমি আমার পরিবারকে খুঁজছি, খুঁজছি আমার প্রেমিকাকে। ওরা বেঁচে আছে না মারা পড়েছে, আমি জানতে চাই। যদি ওদের খুঁজে না পাই, তার পরও হয়তো আমি বেঁচে থাকব, ঝুলে থাকব জীবনের এই ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া সুতো ধরে। সামান্য আশা নিয়ে। যদি জেনে যাই ওরা মরেছে, আমাকে আর কোনো দিন ওদের প্রয়োজন পড়বে না, আমি তখন শান্তিতে মারা যাব।
সব খবর আমাকে এই শহরের দিকেই নিয়ে এসেছে। যদি আমার প্রেমিকা, আমার ভাইবেরাদর বা আমার পরিবারের কেউ বেঁচে থাকে তো তারা এখানেই আছে। এটাই দুনিয়ার শেষ শহর। এটার মরচে ধরা সদর দরজার ওপাশেই আছে মরুভূমি। ওই মরুভূমি দুবাহু বিস্তার করে আছে সেই অতীত পর্যন্ত। ছুঁয়েছে ইতিহাস, পশ্চিমা সভ্যতা আর দুর্বিষহ খরা, দুর্ভিক্ষও—এর নাগপাশে হূদয়হীন বিশালকায় পবর্তমালাও। ওটার চূড়া থেকে রাতে ভেসে আসে নিষ্ঠুর আত্মাদের হূদয় হিমকরা ভয়ংকর গানের সুর। ওদের গান আমাদের প্রত্যাশা কেড়ে নিয়েছে, আমরা বাধ্য হয়েছি আমাদের সমস্ত শক্তি, বীর্য বাতাসের কাছে সমর্পণে। ওদের নিষ্করুণ, হিম ধরানো গান স্পষ্টত আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে মৃত্যুর কাছে নিজেদের সঁপে দিতে।
আমাদের পেছনে, আমাদের সেই অতীতে, আমাদের জন্য দুনিয়ার সব রকম সম্ভাবনা ছিল। অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তু থেকেও আমাদের সামনে মহীরুহ গড়ে তোলার অপার সম্ভাবনা, সুযোগ সব ছিল, শুধু আমরা যদি তা ঠিকমতো অনুধাবন করতে পারতাম। কিন্তু এখন, আমাদের সামনে শুধু ওই মৃত্যু উপত্যকা থেকে ভেসে আসা গান ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই।
যন্ত্রের মতো আমরা আমাদের প্রিয়জনদের খুঁজে যাচ্ছি, শুকনো পাথুরে মুখ-চোখে। আমাদের উদরের আর কোনো অস্তিত্ব নেই। আসলে এই নিরন্তর খোঁজা ছাড়া আর কোনো কিছুরই অস্তিত্ব নেই। লাশগুলো উল্টে উল্টে দেখি চেনা কোনো মুখ কি না। সব শবের মুখ এক রকম; মৃত্যু সবাইকে আমার আত্মীয় করে দিয়েছে।
আমি খুঁজে চলেছি, এভাবে খুঁজতে খুঁজতেই আমি পেয়ে যাই এক অনভ্যস্ত মুখ; আমার ভাইয়ের মুখ। আমি মাথা নত করি। ধুলো ছড়িয়ে দিই তার দেহে। ঘণ্টাখানেক পর, এক কুয়োর কাছে আমার পরিবারের আরও কয়েকজনকে খুঁজে পাই। মা আমার শুকিয়ে হাড়ের সঙ্গে এমন চিমসে মেরে গেছে, মাছির খাবারও জুটবে না ওই হাড় থেকে এখন। দুবার মাথা নুইয়ে ধুলোয় ঢেকে দিলাম লাশগুলো। খোঁজা অব্যাহত রাখি। আরও একটি চমৎকার অনভ্যস্ত মুখ অবশিষ্ট আছে, যাকে পেলে নিজেকে খানিকটা প্রবোধ দিতে পারব। আর এটা তো নিশ্চিত, ওই শেষ মুখটার খোঁজা যখন শেষ হয়ে যাবে, আমি তো তখনই নিজেকে সমর্পণ করব ওই উপত্যকার গানের কাছে।
অসমাপ্ত একটা স্কুল ভবনের কাছে পৌঁছে গানের সুর কানে এল, পেছনে তখন সূর্য অস্ত যাবার সমস্ত আয়োজন সেরে ফেলেছে। জীবনে এমন জাদুকরী সম্মোহনী গান আমি দ্বিতীয়বার শুনিনি, মনে হলো যারা মধুর জীবনের আস্বাদ পেয়েছে, তারাই কেবল এমন গান গাইতে পারে, নিঃশ্বাসের সঙ্গে এই গান যেন প্রার্থনারও।
এই গান যেন সমস্ত সৃষ্টির আনন্দিত বহিঃপ্রকাশ, যেন পবিত্র এক সম্মতি, বাতাস আর আলোর নির্যাসে যার সংঘটনে নদীর জলে আলো ছলকে যায়, মাটি ফুঁড়ে জীবন ঘোষণা করে সদ্য অঙ্কুরিত বীজ, মাঠেঘাটে লাফিয়ে বেড়ায় বুনো প্রাণ, আর নারী-পুরুষ চোখ মেলে দেখে প্রথম সূর্যকিরণ, দুর্দান্ত রঙের আলোকছটা, চারাগাছের হরিৎ, সাগরের সুনীল, বাতাসের সোনা রং আর তারার রুপোলি ঝিলিক। এখানেই আমার সমস্ত খুঁজে ফেরার সত্যিকার সমাপ্তি, আমার প্রতারক জীবনেরও ইতি, এই সমাপ্তি আমি প্রত্যাশা করিনি ঠিক, কোনো দিন কল্পনাও করিনি।
মনে হচ্ছে ওই স্কুলঘরটিতে পৌঁছাতে আমার অযুত-নিযুত সময় কেটে যাচ্ছে। আমার আর কোনো শক্তি অবশিষ্ট নেই, আমায় হাঁ করে গিলে খেতে আসা বিশাল ওই ক্ষুধার মাঝে ওই সংগীত অনুরণিত হচ্ছে কেবল এখন, ওই আকর্ষণের দিকে ধেয়ে যাবার জন্যই যেন আমি এখনো বেঁচে আছি। হয়তো এক শতাব্দী পরে, আবারও ইতিহাসের একই পুনরাবৃত্তি ঘটবে, ঠিক এই একই কার্যকারণে, কারণ আমরা কেউই কোনো কিছু থেকে শিক্ষা নিই না; কিংবা আমরা ভালোবাসি মৃত্যু থেকে শিক্ষা নিতে। শেষ পর্যন্ত স্কুলঘরের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালাম আমি। কিন্তু আমার আগেই শহরের একমাত্র জীবিত গরুটা হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ল ভেতরে। ও হয়তো আমার মতোই গানের টানেই এখানে হাজির হয়েছে। গরুর পেছনে পেছনে আমি ঘরে ঢুকলাম।
ভেতরে সমস্তটা জুড়ে আছে মৃতেরা। কিন্তু এখানকার বাতাসে মৃত্যুর কোনো গন্ধ নেই। বাতাসে পবিত্র প্রার্থনার সুবাস। মৃত্যুর চেয়ে বেশি কিছু যেন থমকে আছে এই প্রার্থনায়। বাইরের যত্রতত্র পড়ে থাকা লাশগুলোর চেয়ে এখানকার মৃতদের মৃত্যু হয়েছে ভিন্নভাবে। এই স্কুলের মৃতরা আসলে—ক্ষমা চাইছি এই উক্তির জন্য—জীবিত। এই ঘরের প্রশান্তি ব্যাখ্যার আর কোনো উপায় আমার জানা নেই। এবং ওদেরও আমার পবিত্র, প্রশান্তিদায়ক মনে হচ্ছে, কারণ এরা সত্যিই পবিত্র, আমি শুধু এটাই অনুভব করছি, তাদের জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা শুধু অন্যদের কথাই ভেবেছে, সমস্ত পীড়িতের কথা ভেবে ব্যাকুল হয়েছে, নিজেদের কথা ভাবেনি একবারও। আমার এমনটা মনে হচ্ছে কারণ, এই মুহূর্তে আমিও তাই করছি। হামাগুঁড়ি দিয়ে আমি ঘরের কোণে এগিয়ে গেলাম, দেয়ালে হেলান দিয়ে বসলাম, টের পেলাম আমার সব কিছু সমর্পিত হচ্ছে, আমার সত্তা নুয়ে পড়ছে সমগ্র মানব জাতির প্রার্থনায়।
আমি প্রার্থনা করছি—ভালো করেই জানি এই প্রার্থনা প্রকৃত প্রস্তাবে হয়তো শুধু সময় নষ্ট—তার পরও আমার ভেতরটা আর্দ্র হয়ে আসছে সমস্ত জীবিতদের জন্য, আমার প্রার্থনা এই পাহাড়-পর্বত আর গাছপালার জন্য, জীবজস্তু, আর নদীর জন্য, আমার প্রার্থনা সব মানুষের জন্য তারা যেখানেই থাকুক। সমগ্র মানব জাতির যন্ত্রণাক্লিষ্ট চিৎকার আমার কানে আসছে, এটা একই সঙ্গে তীব্র সম্মোহনী সংগীতও। আর আমিও, আমার ঠোঁট নড়ছে না, আমার সেই শক্তিও নেই, কিন্তু নিঃশব্দে কখন যেন আমিও গাইতে শুরু করেছি। সারা সন্ধ্যা আমি গাইলাম। তারপর একসময় মুখ ফিরিয়ে দেখি আমার ঠিক পাশের দীপ্তিময় অপরিচিত মুখটা আমারই প্রেমিকার—শনাক্তকরণের আনন্দে অশ্রু গড়িয়ে নামল আমার দুচোখ বেয়ে। টেলিভিশন ক্যামেরা হাতে হূদয়বান সাদা লোকটি যখন স্কুলঘরে প্রবেশ করল, তখনো আমি গাইছি, নিঃশব্দে। চোখে পানি, কাঁদছি, ঘরভর্তি মৃতের ছবি ধারণ হচ্ছে ক্যামেরায়—হয়তো আমার গানটিও রেকর্ড হচ্ছে।
আমার চতুর্দিকে মৃত্যু; হাসছে, শান্ত, নির্মল হাসি। আমাকে একবারের জন্যও ওরা কোনো অনুনয় করেনি, শান্ত, নিশ্চুপ মুখগুলো শুধু ভেসে যাচ্ছে তীব্র, অপার্থিব আনন্দের দীপ্তিতে। আমাকে কোনো তাড়াও দেয়নি ওরা, সব কিছু ওরা আমার সিদ্ধান্তের ওপরই ছেড়ে দিয়েছে। কোনটা বেছে নেব আমি? মানব জীবন—যাতে আছে সীমাহীন লোভ আর তিক্ততা, আছে মৃত্যু, অনুজ্জ্বল, মৃদু কোমল অক্সিজেন সহযোগে আনন্দদায়ক এক উদাসীনতায় বেঁচে থাকা, আর আছে বিপন্ন বিস্ময়ও, কিন্তু...মানব জীবন আমাকে প্রতারণা করেছে। আমার আর এখন বাঁচার কিছু নেই। ক্ষুধায় আমার আত্মাও পরিত্রাণ চাইছে।

শেষ বারের মতো আমি চোখ মেললাম। দেখলাম আমাদের ওপরে ক্যামেরার চোখ নিবদ্ধ। ওদের কাছে আমরা এখন মৃত। কিন্তু আমি যখন তীব্র কষ্টের মধ্য দিয়ে অন্য এক আলোর মধ্যে ভেসে পাড়ি জমাচ্ছি অচেনালোকে, আমিও ওদের দেখতে পাচ্ছি; দয়ামায়াহীন, ভালোবাসাশূন্য এক পরিত্যক্ত পৃথিবীতে মৃত পড়ে আছে ওরাও। আপাত বিষণ্ন ফাঁকা ঘরে গরুটা হেঁটে বেড়াচ্ছে, ক্যামেরায় সব কিছু ধারণরত দলটার কাছে আমার এমন নির্ভার, আরামদায়ক ভঙ্গিতে পড়ে থাকাটা বোধকরি বিসদৃশ ঠেকল। এটা বুঝেও আড়মোড়া ভেঙে সটান হলাম আমি, আঁকড়ে ধরলাম আমার প্রিয়তমা প্রেমিকার হাত। তীব্র যন্ত্রণায়, হাঁপ ধরা বুকে হাঁ করে শ্বাস টেনে নিয়ে মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে তুললাম, তারপর ছেড়ে দিলাম নিজেকে, পুরো শরীরকে।
আমার হাসি নিঃসন্দেহে রিপোর্টারদের ধন্ধে ফেলে দিতে বাধ্য। তবে ওরা যদি আমার ভাষা জানত, তাহলে বুঝত, এটাই আমাদের বিদায়ের ভাষা, এভাবেই আমরা বিদায়ের কথা বলি।

বেন অকরি
নাইজেরীয় কবি ও লেখক বেন অকরির জন্ম ১৯৫৯ সালে। ছেলেবেলা লন্ডনে কাটলেও ১৯৬৮ সালে পরিবারের সঙ্গে নাইজেরিয়ায় ফেরত যান। পরে এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে আবার লন্ডনে ফিরে আসেন। ১৯৯৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টমিনিস্টার থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি লাভ করেন। প্রথম গ্রন্থ ফ্লাওয়ারস অ্যান্ড শ্যাডোস প্রকাশিত হওয়ার পরপরই আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়ে যান। প্রায়ই তাঁকে জীবিত আফ্রিকান লেখকদের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী লেখক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাঁর সবচেয়ে প্রশংসিত বই দি ফ্যামিসড রোড। এই বইয়ের জন্য তিনি ১৯৯১ সালে বুকার পুরস্কার লাভ করেন। আফ্রিকা অঞ্চল থেকে তিনি কমনওয়েলথ পুরস্কারও পেয়েছেন। তাঁর বেশির ভাগ উপন্যাস-গল্পের বিষয়বস্তু নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধ।

সূত্র: প্রথম আলো: সাহিত্য সাময়িকী ২৮ মে ২০১০

No comments: